লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধী
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্ছু মোল্লার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে স্থানীয় লোকজন বাচ্চু মোল্লাকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যান।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়নপুরের মোল্লা বাড়ির সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে রামগঞ্জ থানার সামনে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবী জানান তারা। অন্যথায় আরো বৃহৎ কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় বিএনপির সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বড় ভাই মাহবুব আলম।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর রোববার বিকেলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান মঞ্জু উপজেলার ইছাপুর ইউপির নারায়ানপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে আসেন। সে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে পলাতক ছিল।
সন্ধ্যার পর এলাকায় মেহেদী হাসান মঞ্জুকে এলাকায় দেখতে পেয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা সাগর হোসেন শুক্কুর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবকদলের কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করার চেষ্টা চালায়। এ খবর শুনে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা এগিয়ে এসে বিষয়টি জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাগর হোসেন শুক্কুরসহ কয়েকজন তথ্য উপদেষ্টার বাবাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে তিনি হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
এ ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলায় অভিযুক্ত সাগর হোসেন শুক্কুর সাথে বারবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বড় ভাই জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মাহবুব আলম বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জেলা সহ সভাপতি মেহেদী হাসান মঞ্জু রোববার এলাকায় আসলে বিএনপি, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের দুগ্রুপে তাকে ধরতে যায়। এক পর্যায়ে কারা আগে আগে ধরবে- সেটাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল-ম্বেচ্ছাসবেক দলের নেতাকর্মীরা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
মাহবুব আলম বলেন, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ থামাতে গেলে তখন গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। তখন আমার বাবা এ ত্রিমুখী সংঘর্ষ থামাতে গেলে আমার বাবার উপর হামলা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীরা এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আবার বাবার হাত ভেঙে যায়।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল বাশার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যারাই এ ঘটনার সাথে জড়িত। তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে। পাশাপাশি মামলার প্রস্তুতিও চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।